শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন
ওয়াশিংটন:
ইলহান ওমার একজন হিজাবী নারী যিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে মুসলিমদের সম্পৃক্ত করার জন্য নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রথম সোমালিয়ান-আমেরিকান এই আইন প্রণেতার ভ্রমণ শুরু হয় কেনিয়ার একটি শরণার্থী কেন্দ্র থেকে, যেখানে তার পরিবার সোমালিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেয়।
১৯৯৫ সালে যখন তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়ে আসে তখন তার কাছে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ আদর্শ এবং এর বাস্তবতাকে বিভ্রান্তিকর মনে হয়।
কিন্তু তার দাদা যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের ছাত্র ইলহান ওমারকে রাজনীতি সম্পর্কে দীক্ষা দেন এবং ওমারের ভাষায় ‘তিনি আমাকে বলেন আমি এখানে বসে শুধু অভিযোগ করে যেতে পারি না’, ‘আমাকে সেবা দিতে হবে।’
ওমার যিনি একজন সাবেক রিপাবলিকান পার্টির সদস্য, তিনি ২০১৬ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মিনিসোটা রাজ্যের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ নির্বাচিত হন।
২০১৮ সালের আগস্টে তিনি মিনিসোটার ডেমোক্রেটিক প্রাইমারী হিসাবে জয় লাভ করে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম নারী কংগ্রেসওমেন হন।
৩৬ বছর বয়সী মুসলিম-আফ্রিকান এই নারী যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তার নিজস্ব চিন্তাভাবনা রয়েছে এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী ও শরণার্থীদের সম্পর্কে চলমান বিতর্ককে অপছন্দ করেন।
রূঢ় অতীত বর্তমানে ভালো ফলাফল বয়ে আনে
ইলহান ওমার সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুতে জন্মগ্রহণ করেন কিন্তু বড় হন বাইদাহাবো শহরে। তিনি তার সাত ভাই বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ।
ইলহান ওমারের পিতা নুর মোহাম্মদ সোমালিয়ার একজন শিক্ষক ছিলেন, অন্যদিকে তার মাতা ছিলেন এজন গৃহিনী। ওমারের ছোট বেলাতেই মা মারা যান। ওমার এরপর তার দাদা আবু বাকারের নিকটে পালিত হন, যিনি সোমালিয়ার জাতীয় সমুদ্র যান চলাচলের পরিচালক ছিলেন।
১৯৯১ সালে সোমালিয়াতে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ওমার তার পরিবারের সাথে কেনিয়াতে শরনার্থী কেন্দ্রে আশ্রয় নেন এবং সেখানে চার বছর কাটান। ১৯৯৫ সালে ওমার তার পরিবারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে অভিবাসী হিসাবে আসেন।
তার পরিবার পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক শহর মিনেয়াপোলিসে আসেন যেখানে ওমার মাত্র তিন মাসের জন্য ইংরেজী শিক্ষা নেন। ২০১১ সালে তিনি নর্থ ডাকোটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিক্যাল সাইন্স এবং ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের উপর স্নাতক ডিগ্রী নেন।
অধিকার এবং অবস্থান
যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পরিবারের আয় ১২৫,০০০ ডলারের নীচে সেসব পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ১৫ ডলারের বৃত্তি এবং কলেজে বিনা মুল্যে শিক্ষা নেয়ার ব্যাপারে সমর্থন করেন।
ওমার ‘ইসরাইলের বিদ্বেষমূলক শাসন ব্যবস্থার’ একজন কড়া সমালোচক এবং তিনি ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বয়কট ও নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদির প্রতি সমর্থন জানান।
২০১৪ সালে সাবেক রিপাবলিকান পার্টির পার্টির এই নেতা বর্তমানে ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন সদস্য হিসাবে ‘ওমেন’স হল অব ফেম’ হিসাবে ভূষিত হন। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেপোলিস ভিত্তিক আফ্রিকান অভিবাসী একটি গণমাধ্যম কর্তৃক ‘লিডারশীপ এওয়ার্ডে’ ভূষিত হন।
অধিকন্তু, ২০১৭ সালে টাইম ম্যাগাজিন ওমারকে ‘প্রথম নারী যিনি বিশ্বকে পরিবর্তন করে দিয়েছেন’ উপাধিতে ভূষিত করে এবং ২০১৮ সালে বিখ্যাত ম্যাগাজিন ভোগ ওমারের পরিবারকে ‘ওমারের পরিবার আমাদের জানা মতে পাঁচটি পরিবারের একটি যারা বিশ্বকে পরিবর্তন করেছে’ এমন অভিধায় ভূষিত করে।
সূত্রঃ এবাউট ইসলাম